আন্তর্জাতিক ডেস্ক
চীনের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের সর্বশেষ নিষেধাজ্ঞাকে ‘অবৈধ ও একতরফা’ বলে অভিযোগ করেছে দেশটি। তাদের অভিমত, তথ্য প্রমাণ ছাড়াই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেক সুলিভানের বেইজিং সফরের আগে মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) এমন মন্তব্য করা হলো। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের নাম উল্লেখ না করে ইউরেশীয়া বিষয়ক চীনের বিশেষ দূত লি হুই বলেন, ‘নির্দিষ্ট একটা দেশ এই সংকটের (রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ) ফায়দা নিচ্ছে। নিজেদের চীন বিরোধী অবস্থান বজায় রাখতে কাল্পনিক দায় চাপাচ্ছে। রাশিয়ার সঙ্গে স্বাভাবিক অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক থাকা দেশগুলোকেও অবৈধ ও একতরফা নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে তারা।’
ব্রাজিল, ইন্দোনেশিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকার কর্মকর্তাদের নিয়ে বেইজিং-এ অনুষ্ঠিত কূটনীতিকদের ব্রিফিং এ তিনি এসব বিষয়ে কথা বলেন তিনি।
গত সপ্তাহে চার শতাধিক ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে মার্কিন প্রশাসন। ইউক্রেনে রুশ বাহিনীর আগ্রাসনে সমর্থন দেওয়ার অভিযোগে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তালিকায় বেশ কিছু চীনা প্রতিষ্ঠানও ছিল। দেশটির কর্মকর্তারা বলেছেন, এই প্রতিষ্ঠানগুলো রাশিয়াকে পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা এড়িয়ে চলতে ও সামরিক সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সহায়তা করছিল। নিষেধাজ্ঞায় রাশিয়াতে যন্ত্রাংশ ও মাইক্রোইলেক্ট্রনিক্স রপ্তানিতে জড়িত চীনা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
মস্কোর প্রতিরক্ষা খাতে সহায়তা করা থেকে বিরত থাকতে একাধিকবার বেইজিংকে সতর্ক করেছে ওয়াশিংটন। সামরিক উদ্দেশ্যে প্রযুক্তির ব্যবহারে রাশিয়ার সক্ষমতা হ্রাস করতে ইতোমধ্যে শত শত নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
রবিবার দেশটির বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সরাসরি এই নিষেধাজ্ঞার বিরোধিতা করেছে। আর পররাষ্ট্র মন্ত্রাণালয় আগের নিষেধাজ্ঞা নিয়ে বিরোধিতা করেছে।
লি আরও বলেন, ‘পুরোপুরি নিজেদের স্বার্থোদ্ধারের জন্য এসব পদক্ষেপ নিয়েছে তারা। এসব অভিযোগের কোনও ভিত্তি নেই। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় তা মেনে নেবে না।’
চীন নিজেকে চলমান ইউক্রেন-রাশিয়া সংকট নিরসনে আগ্রহী হিসেবে উপস্থাপন করে আসছে। কিন্তু জুনে অনুষ্ঠিত সুইস শান্তি সম্মেলনে তারা অংশগ্রহণ করেনি।
লি’র নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত আগের বৈঠকগুলোতে যুদ্ধ নিয়ে বেইজিং কিছু প্রস্তাবনা উপস্থাপন করেছিল। তার মধ্যে আছে, যুদ্ধবন্দি বিনিময়ে সমর্থন, পারমাণবিক ও জৈবিক অস্ত্র ব্যবহারে বিরোধিতা , বেসামরিক পারমাণবিক সংস্থার ওপর সশস্ত্র আক্রমণ।
এক বছর আগে ১২ দফা সম্বলিত একটি বিবৃতি দিয়েছিল চীন। সেখানে যুদ্ধ অবসানে সাধারণ কিছু নীতিমালা প্রকাশ করেছিল তারা। তবে বিস্তারিত কিছু ছিল না।
চলতি বছরে রাশিয়া-ইউক্রেন শান্তি আলোচনার যৌথ আহ্বান জানিয়েছে চীন ও ব্রাজিল। চীনের শান্তি প্রচেষ্টায় আরও দেশ সমর্থন জানাবে বলে লি আশা প্রকাশ করেন।