
মানুষের জীবন বিপন্ন করে দাবি আদায়ের শিক্ষা কে দিয়েছে ডাক্তারদের? ওদের রাস্তা আটকানোর পিছনে অন্য কোনো সুরসুরি কাজ করছে, যা সেনাবাহিনী এক্সেপ্ট করবে না বলে জানিয়েছেন সেনাবাহিনীর মেজর মেজবাহ উদ্দিন। রাস্তা আটকে অবরোধ করা শিক্ষার্থীদের উপর লাঠিচার্জ করা প্রসঙ্গে সেনাবাহিনীর এই মেজর হুঁশিয়ার করেন, পরবর্তীতে রাস্তা আটকে আন্দোলন করলে সেনাবাহিনী গ্রেপ্তার করতে বাধ্য হবে।
দীর্ঘ প্রতীক্ষার পরও হাসপাতাল চালু না হওয়ায় গত কয়েক দিন ধরে নানা কর্মসূচি পালন করছেন সুনামগঞ্জ মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা। রোববার (২০ এপ্রিল) তাদের ব্যারিকেডে সড়কের দুই পাশে কয়েক কিলোমিটার দীর্ঘ যানজট হয়ে দুর্ভোগে পড়েন যাত্রীরা। এই অবস্থায় সেনাবাহিনী শিক্ষার্থীদের সড়ক ছেড়ে দিতে অনুরোধ করলে দুইপক্ষের মধ্যে উত্তেজনা ছড়ায়। সেনাবাহিনীর সঙ্গে শিক্ষার্থীদের ধস্তাধস্তি শুরু হলে একপর্যায়ে সেনাবাহিনী লাঠিচার্জ করে।’
ঘটনার পর সেনাবাহিনীর মেজর মেজবাহ উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, ‘লোকজন, অ্যাম্বুলেন্স এগুলো আটকিয়ে মানুষের জীবন বিপন্ন করে কথা কেন বলতে হবে? মানুষের জীবন বিপন্ন করে দাবি আদায়ের শিক্ষা কে দিয়েছে ডাক্তারদের? এটার পেছনে অন্য কিছু আছে। তার মানে অন্য কোনো একটা সুরসুরি আছে এটার পেছনে। এই সুরসুরি আমি অ্যাকসেপ্ট করবো না।’
তিনি বলেন, ‘এখানে যথেষ্ট পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে একটা ছেলেকে গ্রেপ্তার করার মতো। সে তো রাষ্ট্রবিরোধী কাজ করছে আমি মনে করি। আমি বলব কারণ রাষ্ট্রের যত রকম কার্যক্রম সে বন্ধ করে দিচ্ছে। বলার পরও যদি কেউ উত্তেজনা দেখায় তাহলে এটা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, এটার পেছনে অন্য কিছু আছে। মেডিক্যাল কলেজের স্টুডেন্টরা প্রাপ্ত বয়স্ক। আজকে আমি শুধু পুশ করেছি। আজকে আমি পুশের মুডে ছিলাম। কারণ আমি রাস্তা ক্লিয়ার চাই।’
মেডিক্যাল কলেজ প্রশাসনের উদ্দেশে এই সেনা কর্মকর্তা বলেন, ‘পরবর্তীতে যদি এরকম হয় তাহলে আপনারা যদি আপনাদের অ্যাডমিনিস্ট্রিটিভ অ্যাকশন না নেন তাহলে আমাদের তাকে শাস্তির আওতায় পুলিশের কাছে হ্যান্ডওভার করতে হবে। কারণ সেনাবাহিনী সার্বভৌমত্ব্যের প্রতীক। এখানে আমি জনগণের প্রতিনিধি হিসেবে দাঁড়িয়েছি। যারা কষ্ট পাচ্ছে, তাদের দুর্ভোগ কমানোর জন্য আমি এখানে দাঁড়িয়েছি। পরবর্তীতে যদি এরকম রাস্তায় আটকায় তাহলে আমরা অ্যারেস্ট করতে বাধ্য হবো। সরকারিভাবে এই ক্ষমতা যেহেতু দেওয়া হয়েছে আমরা এটার সর্বোচ্চ জুডিশিয়াল প্রয়োগটাই করতে বাধ্য হবো।’
সেনা কর্মকর্তা বলেন, ‘এই যে পুরা মিডিয়া আছে, এদের সামনে কিন্তু আপনাদেরকে ব্যর্থ প্রশাসক মনে করা হবে। আমি সেটা চাই না। সবাই আপনারা টিচার, আমাদের শ্রদ্ধার পাত্র। আপনারা কি পারবেন একটু ট্যাকেল দিতে? ’
তিনি বলেন, ‘একটা মেয়েকে কেন রাস্তার সামনে দাঁড় করাতে হবে? আমি আমার দাবি আদায় করতে চাইলে আমি ছেলে আসবো। মেয়েকে কেন আমি এখন রাস্তার ওখানে দাঁড় করাব? সে তো ধাক্কা খেয়ে পড়ে গেলে তার দায় দায়িত্ব কে নিবে? ছেলে হিসেবে তার দায়িত্ব তার বোনকে প্রটেক্ট করা।’
মেজর মেজবাহ উদ্দিন বলেন, ‘আমি চাই এরপর থেকে যদি ওরা এরকম রাস্তার সামনে আসতে চায়, আপনারা আপনাদের প্রোটোকল অনুযায়ী ওদের সামনে থাকবেন। আমি দেখতে চাই তারা তাদের প্রফেসরদেরকে ক্রস করে রাস্তার উপর যাচ্ছে, আমার মনে হয় না এই ধরনের উদ্ধত্য, এ ধরনের বেয়াদবি করার মতো ছেলে আমাদের মেডিকেল কলেজে আছে।’