
কর-জিডিপির অনুপাতে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোরে মধ্যে সবচেয়ে দুর্বল অবস্থায় বাংলাদেশ। নানা উদ্যোগ নেয়ার পরও বাড়ছে না কাঙ্ক্ষিত রাজস্ব।
অভ্যন্তরীণ আয় বাড়াতে পরিবর্তিত এই সময়ে সংস্কারের উদ্যোগ হাতে নিয়েছে সরকার। ভেঙে ফেলা হচ্ছে অর্ধশত বছরের পুরনো এনবিআর। রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা নামে কার্যক্রম শুরু করবে দুইটি নতুন বিভাগ।
এক্ষেত্রে রাজস্ব ব্যবস্থাপনা বিভাগ সামগ্রিক কার্যক্রম পরিচালনা করবে। তাদের কাজের মধ্যে থাকবে রাজস্ব আদায়, বদলি-পদায়ন, বাজেট ব্যবস্থাপনা ও রাজস্ব সংক্রান্ত আইনের প্রয়োগ। বদলি ও পদায়ন, জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা-ও। এই পৃথকীকরণের সিদ্ধান্ত কার্যকরে এখন চলছে শেষ সময়ের প্রস্তুতি।
এনবিআর এর সাবেক চেয়ারম্যান ও সংস্থাটির সংস্কার কমিশনের সদস্য ড. নাসিরউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, রাজস্ব নীতি ও প্রশাসন একজায়গায় থাকলে সিদ্ধান্তগুলো বোঝাপড়ার মাধ্যমে হয়। অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ রাজস্ব বিভাগে পুনর্গঠিত বা এ রকম কিছু একটা হবে। তবে ট্যাক্স বা কাস্টমস ব্যাকগ্রাউন্ডের লোকজনই সেখানে কাজ করবে।
অন্যদিকে, রাজস্ব নীতি বিভাগ মূলত নীতি প্রণয়নে কাজ করবে। আয়কর, ভ্রমণ কর, দানকর, সম্পদ কর, কাস্টমস ডিউটি, আবগারি শুল্ক, সারচার্য এবং শুল্ক কর আরোপ ও অব্যাহতি সংক্রান্ত কার্যক্রম পরিচালনা করবে এই বিভাগ।
এমন সিদ্ধান্তে সুফল মিলবে বলে মনে করেন ড. নাসিরউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেছেন, একই ব্যক্তি জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান ও অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের সচিব এটিই মূল সমস্যা। তারা স্বাধীনভাবে আলাদা কাজ করবে। এমনকি তারা মন্ত্রণালয় বা এনবিআরে বসবে না। একইসাথে এনবিআরকে ডিপার্টমেন্ট থেকে কীভাবে ডিভিশন করা যায় সেটি নিয়ে কাজ হচ্ছে। এজন্য সক্ষমতা বাড়ানো, প্রশিক্ষণ ও গবেষণার ওপর জোর দেয়া হয়েছে।
রাজস্ব বিভাগ সংস্কারে ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে নানা সময়ে পরামর্শ আসে। বলা হয়, যারা কর দেয়, তাদের ঘাড়েই চাপানো হয় করের বোঝা।
ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) সাবেক সভাপতি মীর নাসির হোসেন বলেন, আমরা যে হয়রানির মধ্যে পড়ি তা থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে বলে আশা করছি। কারণ, নীতিটি স্বচ্ছ থাকলে প্রয়োগকারীরা তা করতে বাধ্য থাকবে। সেক্ষেত্রে কোনো অন্যায় হলে কথা বলার সুযোগ থাকবে।
১৯৭২ সালের রাষ্ট্রপতির আদেশ পুনঃপরিবর্তন করে পুনর্গঠন হবে এনবিআর। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী জুলাইয়ে শুরু হবে দুই বিভাগের যাত্রা।