সিদ্ধিরগঞ্জে চকলেটের প্রলোভন দেখিয়ে ৭ বছরের শিশুকে যৌন নিপীড়ন করার অভিযোগে আব্দুল হান্নান (৪০) নামে এক ব্যক্তিকে আটক করে মারধর করে থানায় হস্তান্তর করেছে সাধারণ ছাত্র-জনতা।
ঘটনাটি ঘটেছে বুধবার (১৯ মার্চ) দুপুরে সিদ্ধিরগঞ্জের নাসিক ৭ নং ওয়ার্ডের কদমতলী এলাকায়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, যৌন নিপীড়নের অভিযোগে আব্দুল হান্নানকে আটক করে প্রথমে উত্তম-মধ্যম দেয় বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের ছাত্র নেতৃবৃন্দ। পরে খবর পেয়ে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন নারায়ণগঞ্জ জেলা কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক মেহরাব হোসেন প্রভাত ও যুগ্ম সদস্য সচিব ইমন আহমেদ ঘটনাস্থলে গিয়ে ছাত্রদের হাতে আটক ব্যক্তিকে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে।
এসময় উপস্থিত ছিল সিদ্ধিরগঞ্জ থানার সংগঠক বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্য নাসির, তামিম, ফাহিম ও অন্তর।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন নারায়ণগঞ্জ জেলা কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক মেহরাব হোসেন প্রভাত জানান, কিছুদিন আগে আমাদের ছোট বোন আছিয়া খুব কষ্টের মাধ্যমে পৃথিবী থেকে চলে গেছে। আজ আমার আরেকটি ছোট বোনের আছিয়ার মতো অবস্থা হতে নিয়েছিল। ভাগ্যিস ছাত্র জনতার হাতে ধরা পড়ে গিয়েছে লম্পট ব্যক্তিটি।
আজ দেশে ধর্ষকের কঠোর ও ভয়ানক শাস্তি নেই বলে দিন দিন ধর্ষকের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। ধর্ষকের শাস্তি জনসম্মুখে হতে হবে। যাতে কেউ কু-নজরে তাকানোর সাহস না পায় কোন লম্পট।
প্রশাসন আমাদের মা-বোনদের নিরাপত্তা দিতে না পারলে আমরাই আমাদের মা-বোনদের জন্য নিরাপত্তার দেয়াল হয়ে দাঁড়াবো। গড়ে তুলবো সামাজিক আন্দোলন।
যুগ্ম সদস্য সচিব মোঃ ইমন আহমেদ জানান, ধর্ষণের বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই চলছে, চলবে। ধর্ষকের শাস্তি কঠোর ও ভয়ানক হতে হবে। ধর্ষকের বেঁচে থাকার কোনো অধিকার নেই। দেশের মানুষকে নিরাপত্তা দিতে হলে প্রশাসনকে আরও চৌকশ হতে হবে।
এদিকে শিশুটির মা মুক্তা আক্তার বাদী হয়ে আটকৃত আব্দুল হান্নানকে আসামি করে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি শাহীনুর আলম।
শিশুটির মা মুক্তা আক্তার জানান, বুধবার দুপুর ২টার দিকে তিনি তার বড় বোন রানী বেগমকে ডাক্তার দেখাতে যান। এসময় তার ৭ বছরের শিশু কন্যা বাসায় ছিল। ডাক্তার দেখিয়ে বাসায় এসে মুক্তা আক্তার দেখেন তার মেয়ে বাসায় নাই।
পরে তিনি সহ পরিবারের লোকজন মেয়ে খোঁজাখুঁজি করতে থাকেন। এক পর্যায়ে বিকাল সোয়া ৩টার দিকে কদমতলী উত্তরপাড়াস্থ একটি নির্মাণাধীন বাড়ির ছাদে মেয়ের চিৎকার শুনেন।
সেখানে গিয়ে দেখেন আব্দুল হান্নান তার মেয়ের গালে ও ঠোঁটে চুমু দিচ্ছে এবং শরীরের স্পর্শকাতর স্থানে হাত দিয়ে শ্লীলতাহানি করছে। এসময় মুক্তা আক্তার চিৎকার দিলে আশপাশের লোকজন এসে আব্দুল হান্নানকে আটক করে মারধর করে।
মুক্তা বলেন, এসময় তার মেয়ে উপস্থিত সবার সামনে বলে খেলাধুলা করা অবস্থায় তাঁকে চকলেট কিনে দেয়ার কথা বলে ছাদে নিয়ে যায় হান্নান। তার গালে এবং মুখে চুমু দেয়, শরীরের বিভিন্ন জায়গায় হাত দেয় তখন সে চিৎকার করতে থাকলে বিবাদী আমার মেয়েকে বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতি হুমকি প্রদান করে।