আজ সোমবার, ডিসেম্বর ২৩, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

‘সোর্সকে’ পুলিশের জুতা ও ভেস্ট পরিয়ে যানবাহনের কাগজপত্র চেকিংয়ের নামে তল্লাশি চালানোর সময় জয়পুরহাটের আক্কেলপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) ইউনুস আলীকে গণধোলাই দিয়েছেন স্থানীয় জনতা। গতকাল বুধবার রাতে উপজেলার রুকিন্দিপুর ইউনিয়নের কানুপুর হালির মোড়ে এ ঘটনা ঘটে। রাতেই এসআই-কে থানা থেকে প্রত্যাহার করে জেলা পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে।

জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আব্দুল ওয়াহাব বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, এসআই ইউনুস আলীকে রাতেই প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনে নেওয়া হয়েছে। আর সোর্স পরিচয়দানকারী ভুয়া পুলিশ পারভেজের বিরুদ্ধে মামলা করা হবে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও থানা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বুধবার সন্ধ্যায় আক্কেলপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) ইউনুস আলী পৌর সদরের আক্কেলপুর-জয়পুরহাট সড়কের কেচের মোড়ে সাদা পোশাকে সন্ধ্যাকালীন ডিউটি করছিলেন। সেখানে তার ‘সোর্স’ পারভেজ হোসেনকে ডেকে নেন তিনি। এ সময় পারভেজকে পুলিশের জুতা ও আলো প্রতিফলিত (রিফলেকটিভ) ভেস্ট পরিয়ে সড়কে চলাচলকারী যানবাহনের কাগজপত্র চেকিংয়ের নামে তল্লাশি চালায়। রাত আটটার দিকে আক্কেলপুর থেকে জয়পুরহাটের দিকে যাওয়া একটি মোটরসাইকেলকে থামার জন্য সংকেত দেন তারা। কিন্তু মোটরসাইকেলচালক তাদের সংকেত অমান্য করে চলে যান। তখন পারভেজ অন্য একটি মোটরসাইকেল আরোহীকে থামিয়ে ওই সংকেত অমান্যকারী মোটরসাইকেলচালকের পেছনে ধাওয়া করেন। কিছুদূর যাওয়ার পর হালির মোড়ে তারা থামেন। এ সময় পারভেজের গতিবিধি সন্দেহজনক হওয়ায় স্থানীয়রা তাকে আটকে রেখে পরিচয় জানতে চাইলে তিনি নিজেকে পুলিশ বলে দাবি করেন। স্থানীয়রা তার পরিচয়পত্র দেখতে চাইলে নিজেকে তখন পুলিশের সোর্স বলে পরিচয় দেন। কিছুক্ষণ পর এসআই ইউনুস আলী তাকে উদ্ধার করতে ঘটনাস্থলে যান। স্থানীয়দের বলেন, সে আমাদের থানার লোক, তাকে ছেড়ে দেন। এ নিয়ে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয়। এর একপর্যায়ে তারা দুজনেই গণধোলাইয়ের শিকার হন। পরে খবর পেয়ে পুলিশ রাত নয়টার দিকে তাদের উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।

পুলিশের সোর্স পরিচয়দানকারী পারভেজ হোসেন নওগাঁর বদলগাছী উপজেলার চকবেনী গ্রামের নজরুল ইসলামের ছেলে।

কানুপুর হালিরমোড় এলাকার বাসিন্দা হাসেম আলী বলেন, ‘গত কয়েকদিন ধরে এসআই ইউনুস আলী তার ‘সোর্সকে’ দিয়ে সড়কে বিভিন্ন যানবাহন ও মোটরসাইকেল থামিয়ে কাগজপত্র দেখার নাম করে ঘুষ বাণিজ্য করে আসছিলেন। তারা আজও এক ব্যবসায়ীকে থামিয়ে পকেটে মাদক ঢুকিয়ে দেন। পরে তাকে থানায় নিয়ে যাওয়ার ভয় দেখিয়ে টাকা দাবি করেন। আর এক মোটরসাইকেলচালককে ধাওয়া করে এখানে এলে তাকে সন্দেহ হয় স্থানীয়দের। পরে তাকে গণধোলাই দিয়ে থানায় দেন স্থানীয়রা।’

থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মইনুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে ঘটনাস্থল থেকে তাদের উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। তাদের দু’জনের বিরুদ্ধেই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Exit mobile version