চট্টগ্রাম-ঢাকার রেলপথের দূরত্ব এখন ৩২০ কিলোমিটার। কিন্তু এই দূরত্ব কমাতে নারায়ণগঞ্জ থেকে কুমিল্লার লাকসাম সোজা রেললাইন (কর্ড লাইন) নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়েছে। এ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে ঢাকা-চট্টগ্রাম রেল যাতায়াতে পথ কমবে ৯০ কিলোমিটার এবং তখন সময় বাঁচবে ৯০ মিনিট।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, সড়ক পথে চট্টগ্রাম-ঢাকার দূরত্ব ২৪৮ কিলোমিটার।
কিন্তু রেলপথে দূরত্ব ৩২০ কিলোমিটার। রেলপথটি ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম আসে টঙ্গী-ভৈরব-আখাউড়া ঘুরে। সড়কের চেয়ে রেলে বেশি সময় ব্যয় করে চট্টগ্রাম-ঢাকা যাতায়াত করতে হয়। এমন দূরত্ব কমানো ও সময় বাঁচাতে ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথে নারায়ণগঞ্জ থেকে কুমিল্লা পর্যন্ত কর্ড লাইন নির্মাণ করার পরিকল্পনা করা হয় ১৯৬৮ সালে।
এ নিয়ে রেলওয়ে একটি সমীক্ষাও পরিচালনা করেছিল। কিন্তু এটি গত মে মাসের দিকে সেটি বন্ধ হয়ে যায়। তবে বন্ধ হওয়া সমীক্ষা আবারও শুরুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে রেলওয়ে। এ নিয়ে গত ২৫ নভেম্বর রেলপথ মন্ত্রণালয়ে একটি সভা হয়।
সভায় কর্ড লাইনের জন্য চারটি প্রস্তাব রেলপথ সচিব বরাবরে উপস্থাপন করা হয়। শিগগিরই এসব প্রস্তাব রেলপথ উপদেষ্টার কাছে উপস্থাপন করা হবে।
রেল যোগাযোগব্যবস্থার উন্নয়নে সুবিধাদি প্রস্তুতিমূলক কারিগরি সহায়তা প্রকল্পের পরিচালক মো. আবিদুর রহমান বলেন, কর্ড লাইন নির্মাণ নিয়ে গত সপ্তাহে অনুষ্ঠিত সভায় চারটি প্রস্তাব উপস্থাপন করা হয়। এর মধ্যে কুমিল্লা থেকে দুটি, লাকসাম ও কুমিল্লা পদুয়া বাজার থেকে একটি করে দুটি রেললাইনের প্রস্তাব করা হয়েছে। আশা করি, এখান থেকে একটি লাইন নির্মাণে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসবে।
এর পর সমীক্ষা ও ডিজাইন করে প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়ন করা শুরু হবে। এটি বাস্তবায়ন হলে অন্তত ৯০ কিলোমিটার রেলপথ কমবে।
কর্ডলাইন বাস্তবায়নে নীতিগতভাবে নেওয়া সিদ্ধান্তের মধ্যে ছিল শ্যামপুর-নারায়ণগঞ্জ-বন্দর-সোনারগাঁ-মেঘনা-তিতাস-মুরাদনগর-দেবিদ্বার-বুড়িচং-কুমিল্লা সদর রুটে সাতটি স্টেশনের প্রস্তাব করেছে রেলওয়ে। এর মধ্যে শ্যামপুর ও কুমিল্লায় স্টেশন রয়েছে। পাঁচটি স্টেশন নতুন করে নির্মাণ করতে হবে। স্টেশনগুলো হলো জালকুঁড়ি, সোনারগাঁ, তিতাস, দেবিদ্বার ও বুড়িচং।
অন্যদিকে টঙ্গী-ভৈরব-আখাউড়ার মধ্যকার বিদ্যমান লাইনটিও সচল থাকবে। নির্মাণের পর কর্ড লাইন দিয়ে কেবল যাত্রী পরিবহন এবং বর্তমানে চালু থাকা ঢাকা-চট্টগ্রাম রেললাইনটি মালামাল পরিবহনে ব্যবহার হতে পারে। দুই লাইনে গতিশীল হবে রেলওয়ের যাত্রী ও পণ্য পরিবহন। বর্তমানে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকার রেলপথে কয়েকটি আন্তনগর ট্রেন চলাচল করে। এর মধ্যে আছে- মহানগর প্রভাতী, মহানগর এক্সপ্রেস, তূর্ণা এক্সপ্রেস ও সোনার বাংলা। এ ছাড়া চট্টগ্রাম-ঢাকা রেলপথে বিভিন্ন ট্রেন চলাচল করে। এর মধ্যে আছে- চট্টগ্রাম মেইল, কর্ণফুলী এক্সপ্রেস, চট্টলা এক্সপ্রেস ও মেইল এক্সপ্রেস। বিভিন্ন সময়ে এই ট্রেনগুলো চট্টগ্রাম স্টেশন থেকে ছেড়ে ঢাকায় যায়।