নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি : নারায়ণগঞ্জ শহরের চাষাড়ায় যানজট নিয়ন্ত্রণে ইজিবাইক ও ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা প্রবেশ করতে না দেয়ায় নারায়ণগঞ্জ শহর ও সিদ্ধিরগঞ্জে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন ইজিবাইক চালকরা।
মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) সকালে নারায়ণগঞ্জের চাষাঢ়া ও সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকায় তাদের বিক্ষোভ করতে দেখা যায়।
এদিন সকালে ইজিবাইক চালকরা শহরের চাষাঢ়া এলাকায় জড়ো হয়ে দুপুরের দিকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেয়ার চেষ্টা করেন।এরপর তারা জেলা প্রশাসন থেকে তাদের বলা হয়, সিটি কর্পোরেশন থেকে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। পরে ইজিবাইক চালকরা সেখান থেকে সিটি কর্পোরেশনের সামনে গিয়ে অবস্থান নেন। সেখানে বিকেল পর্যন্ত অবস্থান করে সরে যান।সিটি কর্পোরেশন (নাসিক) সূত্রে জানা যায়, সড়কে দাপিয়ে বেড়ানো অনিয়ন্ত্রিত অটোরিকশাকে নিয়ন্ত্রণে আনতে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন কর্তৃক লাইসেন্স নবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ উদ্যোগের পর যেসব নিবন্ধনহীন অটোরিকশা সড়কে চলাচল করছে সেগুলোর বিরুদ্ধে সোমবার থেকে অভিযান পরিচালনা করে আসছে সিটি করপোরেশন।সিটি করপোরেশনের এমন সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে সকাল থেকেই ব্যাটারি চালিত রিকশাচালকরা চলাচল বন্ধ রাখে। এ সময় বিকল্প উপায়ে কেউ কর্মস্থল বা গন্তব্যে যেতে চাইলে তাদেরও আটকে দেওয়া হয়। পরে বিকেলের দিকে ইজিবাইক চলাচল স্বাভাবিক হয়।
এসময় ইজিবাইক চালকরা অভিযোগ করেন, গত ৫ আগষ্টের পর পুলিশ কোন ইজিবাইক নারায়ণগঞ্জ শহরের চাষারা ও কালিরবাজার প্রবেশে বাধা দেয়নি। তাছাড়া বিভিন্ন গণমাধ্যমের নামে যে চাঁদাবাজি হতো সেটাও বন্ধ রয়েছে। এতে করে নির্বিঘ্নে তারা চলাচল করতে পারতো। কিন্তু সম্প্রতি জেলা পুলিশ ও সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে ইজিবাইক নগরীতে প্রবেশ করতে পারবে না। আদেশ অমান্য করে প্রবেশ করলে ইজিবাইক আটক করা হবে এবং জরিমানা করা হবে ৫ হাজার টাকা। ইজিবাইক নগরীর খানপুর পর্যন্ত চলাচল করতে পারবে বলে চালকদের জানানো হয়েছে।
এদিকে সিটি করপোরেশনের এমন সিদ্ধান্তে ধর্মঘট ডেকেছে ব্যাটারি চালিত রিক্সাচালকরা। তারা জানান, আমরা রিক্সা চালানো বন্ধ রেখেছি। যতক্ষণ আমরা কোন সমাধান না পাবো ততক্ষণ ইজিবাইক চলাচল বন্ধ থাকবে।
এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মোহাম্মদ জাকির হোসেন বলেন, ‘নগরীতে প্রবেশের ক্ষেত্রে আমরা সকল অবৈধ ইজিবাইকগুলোকে ৩ হাজার টাকা জরিমানা করেছি। ৫ হাজার টাকা জরিমানার বিষয়টি সত্য নয়। পূর্বে পেডেলচালিত রিকশাগুলো চলাচলে সিটি করপোরেশনের অনুমোদন ছিল এবং লাইসেন্স দেওয়া হতো। সেই লাইসেন্সগুলোকে কেউ চাইলে ব্যাটারি চালিত দ্বিআসন বিশিষ্ট বাহনগুলোর জন্য কনভার্ট করে নিতে পারবে। এর বাইরে অন্যান্য সকল ইজিবাইক অবৈধ হিসেবে গণ্য হবে। আর আন্দোলনটা অবৈধ ইজিবাইক চালকরাই করছেন।
নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) রুহুল আমিন সাগর বলেন, নারায়ণগঞ্জ শহরের যানজট নিরসনে আমরা চেষ্টা করছি। তাদের চলাচল বন্ধ করছি না। নগরীর একটি নির্দিষ্ট এলাকা পর্যন্ত তাদের সীমাবদ্ধতা দেওয়া হচ্ছে। শুধু শহরে চাষাঢ়ায় প্রবেশের ক্ষেত্রে তাদের আটক করা হচ্ছে।’