আওয়ামী লীগের ন্যায়বিচার পাওয়ার অধিকার আছে। তাদের করা আইন দিয়েই দ্রুত জুলাই-আগস্ট হত্যাকাণ্ডের বিচার করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। রোববার (১৩ অক্টোবর) সকালে রাজধানীর চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত ঢাকা মহানগরী উত্তরের বার্ষিক সদস্য (রুকন) সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। তিনি বলেন, বিগত সাড়ে ১৭ বছরে এই জাতিকে অনেক জুলুমের শিকার হতে হয়েছে। মুষ্টিমেয় কিছু দুর্বৃত্ত ছাড়া সব মানুষই জুলুমের শিকার হয়েছেন।
এসময় তিনি ২৮ অক্টোবরের কথা স্মরণ করে বলেন, সেদিন লোগি বৈঠা দিয়ে গণতন্ত্র ও জনগণের আকাঙ্খাকে জবাই করা হয়েছিল। সেদিনই এদেশ পথ হারিয়ে ছিল। সেদিন তারা লাশের উপর উঠে নেচেছিল। লাশ চুরি করতে চেয়েছিল। ২৮ আগস্ট যাদের খুন করা হয়েছে তারা কারও উপর ঢিল ছুড়েনি। তাদের অপরাধ ছিল তারা জামায়াত ইসলামীর সভায় যোগ দিয়েছিল। দীর্ঘ সাড়ে ১৭ বছর পর আবার ২০২৪ সালের ৫ ই আগস্ট এদেশ পথ ফিরে পেয়েছে। ২৮ তারিখের পর এক সাজানো নির্বাচন দিয়ে ক্ষমতায় এসেছে একটি দল। এখন দলের মানুষও তাদের নাম নিতে চায়না। সাড়ে ১৫ বছর দাপটের সঙ্গে ক্ষমতায় ছিল। ক্ষমতায় আসার দুই মাস পরেই ৫৭ জন চৌকস সেনাকর্মকর্তাকে তারা হত্যা করেছিল। সেদিন তাদের পরিবারকেও ছাড় দেওয়া হয়নি। লাশ ড্রেনে ভাসিয়ে দিয়েছিল। এটা নিয়ে করা সেনাবাহিনীর তদন্তের রিপোর্ট সেনাবাহিনী ও জানলো না, সারা বিশ্বের কেউ জানলোনা। জেলহাজতে এই বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকা কয়েদির সঙ্গে কথা বলেছিলাম। সে স্বীকার করে বলেছিল এর সঙ্গে আওয়ামী লীগের হাত ছিল। কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমির মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিনের সভাপতিত্বে সম্মেলন সঞ্চালনা করেন কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড.মুহাম্মদ রেজাউল করিম।
জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা.শফিকুর রহমানের উপস্থিতিতে সম্মেলনের উদ্বোধন ঘোষণা করেন বৈষ্যম বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদ নাসিব হাসান রিয়ানের বাবা মো.গোলাম রাজ্জাক। সম্মেলনে বিশেষ অতিথি ছিলেন নায়েবে আমির ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমান, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, মাওলানা আব্দুল হালিম, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য আব্দুর রব, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমির নুরুল ইসলাম বুলবুল, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য মুবারক হোসেন, উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগরী উত্তরের নায়েবে আমির আব্দুর রহমান মূসা, ইঞ্জিনিয়ার গোলাম মোস্তফা, সহকারী সেক্রেটারি মাহফুজুর রহমান, নাজিম উদ্দীন মোল্লা, ডা.ফখরুদ্দিন মানিক প্রমুখ। সকাল থেকে সাড়ে ১১টা পর্যন্ত উদ্বোধনী সেশন অনুষ্ঠিত হয়। দিনব্যাপী সম্মেলন বিভিন্ন সেশনে বিভক্ত। উদ্বোধনী সেশনে আন্দোলনে চোখ ও পা হারানো আহত ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।