আজ সোমবার, ডিসেম্বর ২৩, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

ডেস্ক রিপোর্ট
ধৈর্য, ক্ষমা ও সহনশীলতা মহৎ গুণ। মানুষ অনেক সময় ভুল ত্রুটি করে ফেলে, অন্যায় আচরণ করে ফেলে। সে যখন অনুতপ্ত হয়, ক্ষমা প্রার্থনা করে, তখন প্রতিশোধ নেওয়ার বা শাস্তি দেওয়ার ক্ষমতা থাকার পরও নিজের রাগ সংবরণ করলে, সংযত হলে ও ক্ষমা করলে আল্লাহ খুশি হন। আল্লাহও তাকে ক্ষমা করে দেন। তার জীবনে বরকত ও উন্নতি দান করেন।
কোরআনে আল্লাহ তাআলা তার ক্ষমা ও জান্নাতের দিকে দ্রুত অগ্রসর হওয়ার নির্দেশ দিয়ে বলেছেন জান্নাত প্রস্তুত রয়েছে মুত্তাকিদের জন্য যাদের অন্যতম বৈশিষ্ট্য সদকা করা, ক্রোধ সংবরণ করা ও ক্ষমা করা। আল্লাহ তাআলা বলেন, আর তোমরা দ্রুত অগ্রসর হও তোমাদের রবের পক্ষ থেকে মাগফিরাত ও জান্নাতের দিকে, যার পরিধি আসমানসমূহ ও জমিনের সমান, যা মুত্তাকিদের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। যারা সুসময়ে ও দুঃসময়ে ব্যয় করে এবং ক্রোধ সংবরণ করে ও মানুষকে ক্ষমা করে। আর আল্লাহ সৎকর্মশীলদের ভালবাসেন। (সুরা আলে ইমরান: ১৩৪, ১৩৫)
আরেকটি আয়াতে মুমিনদের বৈশিষ্ট্য হিসেবে ক্ষমাশীলতার কথা উল্লেখ করে আল্লাহ তাআলা বলেন, আর তোমাদেরকে যা কিছু দেয়া হয়েছে তা দুনিয়ার জীবনের (ক্ষণস্থায়ী) ভোগ্য সামগ্রী মাত্র। আর আল্লাহর নিকট যা আছে তা উৎকৃষ্ট ও স্থায়ী তাদের জন্য যারা ঈমান আনে এবং তাদের রবের উপর তাওয়াক্কুল করে। গুরুতর পাপ ও অশ্লীল কার্যকলাপ থেকে বেঁচে থাকে এবং ক্রুদ্ধ অবস্থায়ও তারা ক্ষমা করে দেয়। (সুরা শুরা: ৩৬, ৩৭)
আল্লাহ ক্ষমাশীল, তিনি ক্ষমাশীলতা পছন্দ করেন। মানুষকে ক্ষমা করলে তার ক্ষমা পাওয়া যায়। আল্লাহর ক্ষমা চাইলে মানুষকে ক্ষমা করার নির্দেশ দিয়ে আল্লাহ তাআলা বলেন, তারা যেন ক্ষমা করে ও ত্রুটি-বিচ্যুতি উপেক্ষা করে। তোমরা কি পছন্দ কর না যে, আল্লাহ তোমাদেরকে ক্ষমা করে দেন? আল্লাহ বড়ই ক্ষমাশীল, বড়ই দয়ালু। (সুরা নুর: ২২)
আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) থেকে বর্ণিত নবিজি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, আল্লাহ তাআলা দয়ালুদের উপর দয়া ও অনুগ্রহ করেন। আপনারা জমিনে বসবাসকারীদের প্রতি দয়া করুন, আকাশে যিনি আছেন তিনি আপনাদের ওপর দয়া করবেন। (সুনানে তিরমিজি: ১৯২৪) আবু হোরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত আরেকটি হাদিসে আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, দান-খয়রাত ধন-সম্পদ কমিয়ে দেয় না। বান্দা অন্যকে ক্ষমা করলে আল্লাহ তার সম্মান বাড়িয়ে দেন। আর আল্লাহর জন্য যে ব্যক্তি বিনয়াবনত হয় আল্লাহ তাকে উন্নত করেন। (সহিহ মুসলিম: ৬৭৫৭)
কেউ ক্ষতি করার চেষ্টা করলে তার ক্ষতি থেকে অবশ্যই আত্মরক্ষা করতে হবে, নিজের জীবন, সম্পদ ও সম্মানের হেফাজত করার চেষ্টা করতে হবে। অন্যায়ের যথাযথ বিচার ও প্রতিবিধানের চেষ্টাও করতে হবে। কিন্তু কেউ অনুতপ্ত হলে তাকে ক্ষমা করাই উত্তম যদি তা আরও ক্ষতির কারণ হওয়ার সম্ভাবনা না থাকে। আর বিচার বা শাস্তি চাইলে তা যেন যথাযথ হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। মুমিন কোনো অবস্থায়ই বাড়াবাড়ি বা সীমালঙ্ঘন করতে পারে না। আল্লাহ তাআলা বলেন, আর মন্দের প্রতিফল অনুরূপ মন্দ। অতঃপর যে ক্ষমা করে দেয় এবং আপোস নিস্পত্তি করে, তার পুরস্কার আল্লাহর নিকট রয়েছে। নিশ্চয় আল্লাহ জালিমদের পছন্দ করেন না। (সুরা শুরা: ৪০)

Exit mobile version