নিজস্ব প্রতিবেদক
দেশের চলমান সঙ্কটকালে বানভাসি মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। সোমবার (২৬ আগস্ট) রাষ্ট্রপতি বঙ্গভবনে জন্মাষ্টমীর শুভেচ্ছা বক্তব্যে একথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘আমি আশা করি, পরোপকারের মহান ব্রত নিয়ে যার যতটুকু সামর্থ্য আছে তা দিয়েই অসহায় ও দুস্থ মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য দলমত নির্বিশেষে সবাই এগিয়ে আসবেন।’
রাষ্ট্রপ্রধান বলেন, ‘বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের ১১টি জেলা ভয়াবহ বন্যায় ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বন্যাকবলিত এলাকার লোকজন মানবেতর জীবনযাপন করছে। অসহায় এসব লোকদের নিরাপদ আশ্রয়ের পাশাপাশি জীবন ধারণের জন্য খাদ্য, পানি ও ওষুধসহ বহুমুখী সহায়তা প্রয়োজন।’
সরকার বন্যাকবলিত মানুষের সহায়তায় সর্বাত্মক প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে। এছাড়া, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতাও তাদের সাধ্যমতো সহায়তা দিয়ে যাচ্ছেন বলে তিনি উল্লেখ করেন।
‘শুভ জন্মাষ্টমী’ উপলক্ষে দেশের সকল হিন্দু ধর্মাবলম্বীকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন ধর্ম-বর্ণ ও দলমত নির্বিশেষে দেশকে এগিয়ে নিতে সবাইকে একযোগে কাজ কারার আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, ‘সমাজ থেকে অন্যায়-অত্যাচার, নিপীড়ন ও হানাহানি দূর করে মানুষে মানুষে অকৃত্রিম ভালোবাসা ও সম্প্রীতির বন্ধন গড়ে তোলাই ছিল শ্রীকৃষ্ণের মূল দর্শন।’
রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি আমাদের সংস্কৃতির অনন্য বৈশিষ্ট্য জাতীয় অগ্রগতি ও সমৃদ্ধি ত্বরান্বিত করতে সমাজে বিদ্যমান সম্প্রীতি ও পারস্পরিক সৌহার্দ্য অটুট রাখতে হবে।’
সংবিধান সকল নাগরিকের সমান অধিকারের নিশ্চয়তা দিয়েছে উল্লেখ করে রাষ্ট্রপ্রধান বলেন, ‘বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে হলে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে ভেদাভেদ ভুলে একসাথে কাজ করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘সকল ধর্মের মূল বাণী হচ্ছে মানবকল্যাণ এবং ধর্মীয় মূল্যবোধকে দেশ ও জনকল্যাণে কাজে লাগাতে হবে।’
মো. সাহাবুদ্দিন বলেন, পারস্পরিক সহমর্মিতা, সম্প্রীতি ও মানবিক মূল্যবোধের বন্ধনে নতুন প্রজন্মের জন্য একটি প্রগতিশীল ও শান্তিপূর্ণ সামাজিক ব্যবস্থা গড়ে তোলাই হোক এবারের জন্মাষ্টমীর অঙ্গীকার।
তিনি আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে সম্প্রীতি ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে তুলে ধরতে সমাজে ধর্মীয় সম্প্রীতি বজায় রাখার পাশাপাশি পরমতসহিষ্ণু ও সহনশীল আচরণ করতেও সকলের প্রতি অনুরোধ জানান।
অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বার্তা শেষে রাষ্ট্রপতি দরবার হলে অতিথিদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন। এ সময় রাষ্ট্রপতির সহধর্মিণী ড. রেবেকা সুলতানা, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ধর্ম উপদেষ্টা আফম খালিদ হোসেন, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার, বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুর, বিচারপতি বিশ্বজিৎ দাস, কূটনৈতিক মিশনের সম্মানিত সদস্যবৃন্দ, হিন্দু ধর্মীয় গুরু রামকৃষ্ণ মিশনের অধ্যক্ষ শ্রীমৎ স্বামী পূর্ণাত্মানন্দ মহারাজ, হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের সচিব ড. কৃষ্ণেন্দু কুমার পাল, উপপরিচালক প্রশান্ত কুমার বিশ্বাস, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি শ্রী বাসুদেব ধর, সাধারণ সম্পাদক শ্রী সন্তোষ শর্মা এবং মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির সভাপতি শ্রী জয়ন্ত কুমার দেব ও সাধারণ সম্পাদক ড. তাপস কুমার পাল অনুষ্ঠানে অংশ নেন।
এ সময় রাষ্ট্রপতি কার্যালয়ের সিনিয়র সচিব ড. নাসিমুল গনি, সামরিক সচিব মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আদিল চৌধুরী এবং প্রেস সচিব মো. জয়নাল আবেদীন উপস্থিত ছিলেন।