আজ সোমবার, ডিসেম্বর ২৩, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

গাড়ির স্টিয়ারিংয়ে বসে আছেন সৌদি রাজকন্যা। ভোগ ম্যাগাজিনের প্রচ্ছদে এমনি একটি ছবিতে মডেল হয়েছেন সৌদি রাজকন্যা হায়ফা বিনতে আবদুল্লাহ আল সৌদ। আর এ নিয়েই শুরু হয়েছে চরম বিতর্ক। ম্যাগাজিনটি এমনই এক সময়ে রাজকন্যার ছবি প্রকাশ করল-যখন সৌদিতে নারী আন্দোলনকারীদের ব্যাপকভাবে ধর-পাকড় চলছে। খবর দ্য গার্ডিয়ান।

প্রচ্ছদের ছবিতে দেখা গেছে, একটি লাল রঙের হুড খোলা গাড়ির স্টিয়ারিং ধরে বসে আছেন রাজকন্যা। তার পরনে ছিল সাদা রঙের পোশাক, হাতে চামড়ার কালো দস্তানা এবং পায়ে হাই হিল জুতা। আরব অঞ্চলে ভোগ ম্যাগাজিনের যে সংস্করণ প্রকাশ করা হয়, শুধু তাতেই দেখা গেছে রাজকুমারীকে। আরবের জুন সংস্করণে এ ছবিটি প্রকাশ করা হয়।

‘নতুনত্বে বিশ্বাসী সৌদি নারীদের’ উদ্দেশ্যে প্রচ্ছদটি উৎসর্গ করা হয়। পাশাপাশি, ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেছে ম্যাগাজিনটি। যুবরাজ ‘কঠোর রক্ষণশীল’ বলে পরিচিত সৌদি আরবের কঠোর সামাজিক বিধি-নিষেধ একের পর এক শিথিল করে দিচ্ছেন। ধর্মীয় পুলিশদের ক্ষমতাও খর্ব করেছেন তিনি।

ভোগ ম্যাগাজিনকে সৌদি রাজকন্যা জানান, আমাদের দেশে কিছু রক্ষণশীল আছেন যারা পরিবর্তনে ভয় পান। এমন অনেক মানুষ শুধু এ জন্যই পরিচিত। ব্যক্তিগতভাবে প্রবল আগ্রহের সাথে আমি এ ধরনের পরিবর্তনকে সমর্থন করি।

দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রচ্ছদের ছবিটি পশ্চিমাঞ্চলীয় জেদ্দা শহরের বাইরে একটি মরুভূমিতে তোলা। তবে ছবিটি নিয়ে সমালোচনা করেছেন প্রচার কর্মীরা। এসব প্রচার কর্মীরা মে’তে আটক হওয়া ১১ জন সক্রিয় অধিকার কর্মীকে আটকের বিরোধিতা জানিয়ে আসছেন। আটককারী নারীরা বেশিরভাগই বিভিন্ন অধিকার সংস্থার হয়ে কাজ করছিলেন।

সৌদি নারীদের গাড়ি চালানোর অধিকার দেয়া এবং পুরুষদের অভিভাবকত্ব-ব্যবস্থার অবসান চেয়ে তারা আন্দোলন করছিলেন। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বলছে, আটক নারীদের মধ্যে চারজনকে মুক্তি দেয়া হলেও অন্যদের বিষয়ে কিছু জানা যায়নি। তবে পশ্চিমা মদদপুষ্ট গণমাধ্যম বলছে, আটককৃতরা দেশদ্রোহী ও দূতাবাসের চর।

অনেক ইন্টারনেট ব্যবহারকারীই যেন সৌদি রাজকন্যার এ দুঃসাহসী উদ্যোগ মেনে নিতে পারছেন না। তারা সোশ্যাল মিডিয়ায় এ বিষয়ে সোচ্চার হয়ে উঠেছেন। অনেকেই তাদের পোস্ট করা ছবিতে, ফটোশপের মাধ্যমে প্রচ্ছদের ছবিতে আটককৃতদের ছবি জুড়ে দিয়েছেন।

বিশ্লেষকেরা বলছেন, সৌদি আরবে আন্দোলনকারী ও অধিকারকর্মীদের ওপর চালানো এই ধরপাকড়ে বিশ্বব্যাপী সমালোচনা হয়েছে। এতে করে সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের প্রতিশ্রুত সংস্কার কার্যক্রমের সীমাবদ্ধতা প্রকাশিত হয়েছে।

সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Exit mobile version